News
‘মুমিনেরা’ খুব বলে যাচ্ছে “জিতেছি, দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছি, ইসলাম জিন্দাবাদ”,
হ্যাঁ এগুলো তারা আরো বেশি বেশি প্রচার করুক। আরো বেশি বেশি বলতে থাকুক। আমরা যা করছি, তার ফলাফল কী সেটি সময়ই বলে দেবে।
এখন আমরা বলে দিলে তো সময়ের অপেক্ষা করা হবে না। ওদের চিন্তার দৌঁড় দেখে হাসি পেলেও সেটা চেপে রাখতে হচ্ছে।
টার্গেট অনুযায়ী প্রাথমিক বিজয়টি অর্জিত হয়েছে। আমি যেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছিলাম, মুমিনেরা নিজেরা এসেই সেটার সফলতা দিয়ে গেছে। লক্ষ কোটি সাধারণ মানুষের কাছে আলোচনাটি পৌঁছেছে, যা এক অনবদ্য সাফল্য৷ এভাবে বাঙলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে, প্রতিটি আলোচনার টেবিলে পৌঁছাতে হবে৷ বিতর্কটি যতবেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে, তত আমরা এগিয়ে যাবো। ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে ধর্মান্ধদেরকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেই আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো। চাপাতিকে আমরা যুক্তি দিয়ে পরাজিত করবো।
সেইদিনের বিতর্কটি আশাকরি আপনারা সকলেই দেখেছেন। আমি নিজে কোন বিতার্কিক নই, তর্কে জেতার কোন চাপও আমার ছিল না। আমার লক্ষ্য ছিল মানুষকে এই বিষয়টি জানানো, যে আমরা আসলে কিসের লড়াই করছি। কাদের জন্য লড়ছি। আমি মনে করি সেটি জানাতে পেরেছি।
তর্কে অসততার একটি অত্যন্ত স্বস্তা কৌশল হচ্ছে, বিপক্ষকে ৫০টি মুখস্ত প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া।
যেহেতু সময় অল্প থাকে, ৫০ টি প্রশ্নের উত্তর দেয়া কারো পক্ষে সম্ভব না, এটা জেনেই এই সস্তা গেম খেলা। এবং পরে এই নিয়ে হম্বিতম্বি করা যে, আমার অমুক প্রশ্নটির তো সে উত্তর দিতে পারলো না। লুঙ্গি বাঁচানোর এটা যে খুব সাধারণ অস্ত্র, তা আশাকরি আপনারা যারা সভ্য ও বুদ্ধিমান দর্শক শ্রোতা আছেন, তাঁরা সকলেই বুঝেছেন।
আমার লক্ষ্য ছিল, এরকম একটি অসভ্য অমানবিক বর্বর বিধানের বিরুদ্ধে সাধারণ মুসলিমদেরকেই সচেতন করা। বিপক্ষের বক্তা শিশুরা কত কম বয়সেই তথাকথিত উপযুক্ত হয়ে যায়, শসা খেঁজুর খাইয়ে শিশুদের উপযুক্ত করতে হয়, পিরিয়ড হলেই সেক্সের জন্য উপযুক্ত হয়ে যায় ইত্যাদি। তিনি এই কথাগুলো বলে বরং আমার কাজকে আরো সহজ করে দিয়েছেন। ওনার প্রতিটি কথাই আসলে আমার এক একটি সফলতা, যা খুব ধীরে ধীরে মানুষের মনে প্রভাব ফেলবে।
রাহুল হোসেন আমাকে বিতর্কের চ্যালেঞ্জ করেছিলেন এবং আমিও তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলাম। এমনকি, তাদের পক্ষের মডারেটর রেখে, তাদের সব ধরণের শর্ত মেনে নিয়েই আমি বিতর্কে গিয়েছিলাম। পাশে সাহায্যকারী নিয়ে রাহুল কথা বলছিলেন, যা তিনি নিজেই প্রকাশ করে দিয়েছে। বিতর্কটি যারা দেখেছেন, তারা জানেন রাহুল হোসেন পাশে একজনকে একটি দলিল বের করতে বলছিলেন এবং তাঁর হাতের মুভমেন্ট ও স্লাইডগুলো মুভ করা দেখলেও বুঝে যাবেন যে নিয়ন্ত্রক অন্য কেউ ছিলেন। এছাড়াও, তাদের পক্ষ থেকে আমাকে তুই-তুমি পর্যন্ত বলা হয়েছে। আর মডারেশন কেমন ছিলো তাও আপনারা দেখেছেন। কোন কারণ ছাড়াই একটি সাধারণ ছবি দেখাতে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও মুহাম্মদকে এটা বলা যাবে না, সেটা বলা যাবে না, এরকম নানান ধরণের শর্ত ছিল। সেই সবই মেনে নিয়ে আমি কথা বলেছি।
এবারে তাই আমিও রাহুল হোসেনকে আরেকটি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। তবে আমি তাঁকে শুধুমাত্র ভদ্র আচরণ করা ছাড়া আর কোন শর্ত দিচ্ছি না। আমি এই বিতর্কের পরিবেশটি আরো শক্তিশালী করতে চাই। এই বিতর্কের লক্ষ্য হচ্ছে, চাপাতির ব্যবহার না করে যেন মুসলিমরা যুক্তির ব্যবহার শেখে। তারা যেন এভাবেই বিতর্কে বারবার আসেন, সেটি নিশ্চিত করা।
আমি দেখতে চাই, রাহুল হোসেন এবারে আমার চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করার সাহস করেন কিনা।
চ্যালেঞ্জটি কেমন, তা আমি জানাচ্ছি। এই বিতর্কে কোন সময়ের সীমাবদ্ধতা থাকবে না৷ তাই সকলেই নিজ নিজ পয়েন্ট উপস্থাপন এবং সকল প্রশ্নের দালিলিক উত্তর দিতে পারবেন।
আরো একটি লাইভ বিতর্ক আমি করতে চাইছি। যেখানে ঐ একই বিষয়ের ওপর আমরা আলোচনা করবো। সেই বিতর্কে রাহুল হোসেন তাঁর পক্ষের একজন আলেমকে সাথে নিয়ে আসতে পারবেন। চাইবো, সেই আলেম যেন পরিচিত এবং গ্রহণযোগ্য হন।
অন্যদিকে আমি এবং নাস্তিকদের মধ্য থেকে একজনকে রাখা হবে। সেই সাথে, বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো সম্পর্কে মতামত দেওয়ার জন্য একজন বিজ্ঞানীকে কিছুক্ষণের জন্য থাকার অনুরোধ করা হবে, একইসাথে কিছুক্ষণের জন্য একজন ডাক্তার এবং একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞকেও আমন্ত্রণ করা হবে। একইসাথে, শিশুদের অধিকার নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের একজন এবং আরবী ভাষার ওপর পাণ্ডিত্য আছে এরকম একজনও থাকবেন এই বিতর্কে।
ওনারা পুরোটা সময়ের জন্য থাকবেন না। শুধুমাত্র কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েই তাঁরা চলে যাবেন। বিতর্কটি হবে রাহুল হোসেন, তাঁর পক্ষের একজন আলেম এবং আমি, আমার পক্ষে থাকা একজন মুক্তমনা নাস্তিকের মধ্যে। বাদবাকি সকলেই শুধুমাত্র প্রশ্নের উত্তর দিতে আসবেন। যেহেতু এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞের মতামত জানা জরুরি, তাই বিশেষজ্ঞগণ আমাদের সাহায্য করবেন। বিতর্কের বিষয়বস্তু নিয়ে তাঁরা কোন মতামত দেবেন না। বা বিতর্কেও অংশ নেবেন না।
বিতর্কটির একটি মাত্রই শর্ত, তা হচ্ছে পরস্পরকে সম্মান করে কথা বলতে হবে। কোন অবস্থাতেই কাউকে অসম্মান করা যাবে না। তুই তুকারী তুমি এগুলো বলা যাবে না৷ গালাগালি করা যাবে না। যুক্তি ও দলিল সহকারে শুধুমাত্র নিজের পয়েন্ট উপস্থাপন করতে হবে। আমাদের আলোচনাতে আমরা কেউ কাউকে মিউট করবো না। প্রত্যেকের যুক্তি ও প্রমাণ উপস্থাপনের সুযোগ রাখা হবে। আর যদি আমরা কোন পক্ষপাতিত্ব করিও, জনগণই সেটার সিদ্ধান্ত নেবেন।
নিজের দলের লোক মডারেশনে না থাকলে সম্ভবত রাহুল হোসেন এই বিতর্কে আসার সাহস করবেন না৷ তারপরেও আমি যেহেতু তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলাম, তাই আমি এবারে তাঁকে আহ্বান করছি। দেখা যাক তিনি এই আহ্বানে সাড়া দেন কিনা।
আর তিনি সাড়া না দিলেও, আমাকে আলোচনাটি করতে হবে। এবং বিতর্কের ওপর বিশ্লেষণাত্মক এই আলোচনাটি খুব দ্রুতই হবে। রাহুল সাহেবরা আসলে ওনারা ওনাদের পক্ষে আরো যুক্তি তুলে ধরতে পারবেন৷ ওনাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সসম্পূর্ণ সুযোগ দেওয়া হবে। এই আলোচনায় আপনাদের জন্য অনেকগুলো সারপ্রাইজও থাকবে।
সামনের বিতর্কের জন্য প্রস্তুত হোন।
Comments
Post a Comment